ফরিদ আহাম্মদ
জনাব ফরিদ আহাম্মদ (Farid Ahmed) ৩০ অক্টোবর, ২০২২ তারিখে সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তিনি বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ১১তম ব্যাচ এর একজন সদস্য। তিনি ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে যোগদানের পূর্বে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। এছাড়া, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) এ কিছুদিন কাজ করেছেন। সিভিল সার্ভিসে তিনি ৩১ বছর এর কাছাকাছি সময় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সচিবালয় এবং মাঠ প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অতিরিক্ত সচিব, যুগ্মসচিব, উপসচিব, জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা দুর্নীতি দমন অফিসার, ক্যান্টনমেন্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং সহকারী কমিশনার ও ১ম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগদানের পূর্বে প্রায় দেড় বছর তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও সামরিক ভূমি ও ক্যান্টনমেন্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে প্রায় ৩ বছর ১ মাস দায়িত্ব পালন করেন। তৎপূর্বে তিনি প্রায় আড়াই বৎসর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এর পূর্বে তিনি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের উপসচিব, ময়মনসিংহ জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, গাইবান্ধা জেলার সাদুল্যাপুর উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং ২০০১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত জেলা দুর্নীতি দমন অফিসার/দুর্নীতি দমন অফিসার হিসেবে দুর্নীতি দমন ব্যুরোতে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি মে, ২০১২ হতে জুন, ২০১৫ সাল পর্যন্ত ৩ বৎসর এর অধিক সময় পর্যন্ত রংপুর জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময়কালে সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী কাজের মাধ্যমে জনসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ২০১৬ সালে জনপ্রশাসন পদকে ভুষিত হন এবং স্কাউটস আন্দোলনে বিশেষ অবদানের জন্য মেডেল অব মেরিট পদক প্রাপ্ত হন। তিনি ২০২৩ সালে বাংলাদেশ স্কাউট এর সর্বোচ্চ এওয়ার্ড “রৌপ্য ব্যাঘ্র” পদক প্রাপ্ত হন।
তিনি নরসিংদী জেলার সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি দুই পুত্র সন্তানের জনক। বড় সন্তান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসসি) এ স্নাতক পাশ করে বর্তমানে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে CSE এর প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন এবং ছোট সন্তান বুয়েটের আর্কিটেকচার বিভাগে ১ম বর্ষে অধ্যয়নরত। তাঁর সহধর্মিনী একজন ডিপ্লোমা আর্কিটেক্ট ও বিএসসি সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এবং কবি ও উপন্যাসিক। ফরিদ আহাম্মদ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হতে কৃষিতে ১ম শ্রেণীর সম্মান এবং স্নাতকোত্তর কৃষি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গাজীপুর হতে এনটোমোলজিতে ১ম শ্রেণীতে এমএস ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তীতে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি থেকে ১ম শ্রেণীতে এম.বি.এ (ফাইন্যান্স) ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ে লিডারশিপ ইন পাবলিক সেক্টর কোর্স, যুক্তরাজ্যের ওলভার হাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ে সুপারম্যাট, অষ্ট্রেলিয়ার ম্যাককুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে এসডিজি বিষয়ক প্রশিক্ষণসহ, সিঙ্গাপুর সিভিল সার্ভিস একাডেমি ও ভিয়েতনামের ন্যাশনাল একাডেমি ফর পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন এ বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ এবং ভারতের এনআইআইটিতে কম্পিউটার ও কমিউনিকেটিভ ইংলিশ বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
আন্তর্জাতিক সম্মেলন, সরকারি ডেলিগেশন, সেমিনার, বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ ও কর্মশালায় অংশগ্রহণসহ তিনি সরকারি দায়িত্বপালনের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, জার্মানী, চীন, পোলান্ড, চেক প্রজাতন্ত্র, গ্রীস, অষ্ট্রিয়া, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, জাপান, ভিয়েতনাম, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, সৌদিআরব, থাইল্যান্ড, মালদ্বীপ, মায়ানমারসহ বিভিন্ন সময়ে ৩৫টি দেশ ভ্রমন করেন। তিনি কর্মক্ষেত্রে দ্রুততার সাথে সিদ্ধান্ত গ্রহণে পারঙ্গমতাসহ সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী কাজে আগ্রহী এবং প্রায় প্রতিটি কর্মক্ষেত্রেই এর ছাঁপ রেখেছেন। তিনি সমসাময়িক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে লেখালেখি করেন এবং বর্তমানে একটি সাহিত্য পরিষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ঢাকা মহানগর রেডক্রিসেন্ট ইউনিটের আজীবন সদস্য। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ স্কাউটস্ এর সহ-সভাপতি হিসেবে এবং বাংলাদেশ এডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশনের ২০২৩-২০২৪ মেয়াদে কেন্দ্রিয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।